PREMIER UNIVERSITY

Department of LAW

আইন বিভাগের ‘পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ শীর্ষক সেমিনার

প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির দামপাড়াস্থ কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের উদ্যোগে ও আইকিউএসির সহযোগিতায় ‘পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, শনিবার, সকাল ০৯টায় অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাজবিজ্ঞানী, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন। আলোচক ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির মাননীয় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী শামীম সুলতানা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক, কক্সবাজার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর জজ (ডিস্ট্রিক্ট জজ পদমর্যাদার) জনাব মোহাম্মদ আবু হান্নান এবং ঢাকাস্থ আইএলও-র বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রামের এন্টারপ্রাইজ এডভাইজার মো. মিনহাজুল ইসলাম। আইন বিভাগের চেয়ারপার্সন তানজিনা আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপক ছিলেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিল্লোল সাহা। সেমিনার সঞ্চালনা করেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাহমিনা সানজিদা সাহীদ।
প্রবন্ধে কর্মস্থলে পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন করণীয় বিষয় উল্লেখ করা হয়; যেমন, কারখানা নির্মাণ ও বাস্তবায়নের সময় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা মান এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিবেশের নিয়মকানুন বজায় রাখতে হবে এবং নিয়োগকারীদের অবশ্যই সমস্ত ওএসএইচ (অকুপেশনাল সেইফটি এন্ড হেলথ) ঝুঁকি চিহ্নিত করতে হবে এবং সমস্ত শ্রমিকের এই ধরনের ঝুঁকি এবং দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণগুলি প্রতিরোধ করতে হবে। সেইফটি কমিটি থাকতে হবে। শ্রমিকদের সংখ্যা অনুসারে ফার্স্ট এইড বক্স, ডিসপেনসারি, মেডিকেল সেন্টার, কুলিং ওয়াটার, রেস্টরুম, পিপিই প্রভৃতির ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়া ইন্স্যুরেন্স স্কিম চালু করতে হবে।
প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. অনুপম সেন এই প্রবন্ধকে যুগোপযোগী ও কালোপযোগী চিহ্নিত করে বলেন, প্রবন্ধটি শুধু আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, সমস্ত সমাজের জন্য। তিনি বলেন, কুটিরশিল্প অনেক আগে থেকেই আছে। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি বলতে আজকে আমরা যা বুঝি, তার উদ্ভব অষ্টাদশ শতকে। ১৭৬০ দশকের মাঝামাঝি ইংল্যান্ডে প্রথম শিল্পবিপ্লব সংঘটিত হয়। ইংরেজরা ১৭৫৭ সালে এদেশ দখল করার পর মাত্র তিন বছরের মধ্যে তৎকালীন ৫০০ কোটি পাউন্ডের সম্পদ ইংল্যান্ডে পাচার করে। এই বিশাল সম্পদ ও ক্যারিবিয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে তাদের লুণ্ঠন করা সম্পদ দিয়েই প্রথম শিল্পবিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। তখনকার ইন্ডাস্ট্রি বা কারখানাগুলোতে পুরুষ ও নারী শ্রমিকরা দৈনিক ১২/১৪ ঘন্টা কাজ করতো। শিশুদেরকেও শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করা হতো, যা ছিল খুবই অমানবিক। পুরুষ, নারী ও শিশু শ্রমিকরা প্রচুর শ্রম দিয়েও তার প্রকৃত মূল্য পেত না।
প্রফেসর ড. অনুপম সেন আব্রাহাম লিংকন কর্তৃক আমেরিকার ক্রীতদাস প্রথার উচ্ছেদ, সেখানকার কালো মানুষদের শ্রমদাসত্ব, তাদের মানুষ ও নাগরিক হিসেবে মর্যাদা না পাওয়ার বিবরণ দেন। তিনি আরও বলেন, আধুনিককালে বিশ্বের প্রথম লিখিত সংবিধান রচনা করে তৎকালীন ১৩টি ব্রিটিশ কলোনি স্বাধীনতা পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র নামক রাষ্ট্রটি। এইসময় যেহেতু তাদের ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রত্যেক নাগরিককে অস্ত্র রাখার অধিকার দেওয়া হয়েছিল, এখনও সেই অধিকার সংবিধানে রাখার ফলে যে-কেউ স্কুলে, কলেজে, রাস্তায় নিরীহ নাগরিক ও শিশুদের হত্যা করে; মানুষকে তার বাঁচার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। এটি কি মানবাধিকারের চরম লংঘন নয়?
তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্ব চলে সম্পদের উপর ভিত্তি করে। শ্রমিকরাই এই সম্পদ সৃষ্টি করে থাকে।
উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী শামীম সুলতানা বলেন, বিশ্বে প্রতি বছর কয়েক কোটি মানুষ পেশাগত অসুস্থতা ও নিরাপত্তাজনিত সমস্যায় ভুগে থাকে। এটা শুধু শ্রমিকের ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, ইন্ডাস্ট্রিরও ক্ষতি, দেশেরও ক্ষতি। এক পর্যায়ে এই মানুষগুলো পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বোঝা হয়ে মারা যায়। কর্মক্ষেত্রে পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রফেসর আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ওএসএইচ (অকুপেশনাল সেইফটি এন্ড হেলথ) বিশ্বে আলোচিত একটি বিষয়। শ্রমিকদের নিরাপত্তা-ব্যবস্থা না করে প্রোডাক্টিভিটি সম্ভব নয়। ইন্টারন্যাশনাল লেবারস স্ট্যান্ডার্ড প্রয়োগ করে তাদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার। তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের দেশে ৮০ শতাংশ রেমিটেন্স আসে আরএমজি সেক্টর থেকে, শ্রমিকের শ্রমের মাধ্যমে।    
কক্সবাজার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর জজ (ডিস্ট্রিক্ট জজ পদমর্যাদার) জনাব মোহাম্মদ আবু হান্নান তাঁর বক্তব্যে এদেশের গার্মেন্টস কারখানাগুলোর মালিক ও শ্রমিকদের আর্থিক বৈষম্যের বিবরণ দিয়ে বলেন, শ্রমিকের মূল্যায়ন ও অধিকার আদায়ে সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ঢাকাস্থ আইএলও-র বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রামের এন্টারপ্রাইজ এডভাইজার মো. মিনহাজুল ইসলাম বাংলাদেশের শ্রম আইন ও আইএলও-র দৃষ্টিকোণ থেকে ইন্ডাস্ট্রির কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা তুলে ধরেন।
সেমিনারে আইন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Related Events

MOOTING WORKSHOP BY MOOTING SOCIETY

Read More

Cyber Security Awareness and Protection: A Special Discussion at Department of Law

Read More

BLOOD GROUPING CAMPAIGN

Read More

CANCER AWARENESS PROGRAM

Read More

প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে হিম উৎসব ও কাওয়ালী সন্ধ্যা

Read More

HIM O KAWALI UTSHOB 2025

Read More

প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি আইন বিভাগে উইনটার ফেস্ট

Read More
Copyright © 2024 Premier University IT. All rights reserved.